ময়মনসিংহ থেকে জারিয়া ট্রেনের সময়সূচী,ভাড়া এবং স্টপেজ স্টেশন
ময়মনসিংহ থেকে জারিয়া রেলপথ বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং জনপ্রিয় রুট। এই রুটে যাত্রা করেন বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ, শিক্ষার্থী, এবং ব্যবসায়ীরা। ট্রেনে ভ্রমণ সাশ্রয়ী, আরামদায়ক এবং নিরাপদ হওয়ায় এই রুটের যাত্রীদের মধ্যে ট্রেন বেশ জনপ্রিয়। ময়মনসিংহ থেকে জারিয়া রুটে বাংলাদেশ রেলওয়ে একাধিক আন্তঃনগর, মেইল এবং লোকাল ট্রেন পরিচালনা করে। এই ব্লগে আমরা ময়মনসিংহ থেকে জারিয়ার ট্রেনের সময়সূচী, ভাড়া, স্টপেজ স্টেশন এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে আলোচনা করব।
ময়মনসিংহ থেকে জারিয়া ট্রেনের ভাড়া
ময়মনসিংহ থেকে জারিয়া রুটে বিভিন্ন শ্রেণির ট্রেন এবং আসনের জন্য আলাদা আলাদা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। ভাড়া নির্ভর করে ট্রেনের ধরন এবং আসনের ধরন অনুযায়ী। নিচে ময়মনসিংহ থেকে জারিয়ার ট্রেনের বিভিন্ন শ্রেণির ভাড়ার তালিকা উল্লেখ করা হলো:
১. শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) চেয়ার:
- ভাড়া: ২০০-২৫০ টাকা
- এসি চেয়ার আসন আপনাকে আরামদায়ক ভ্রমণের নিশ্চয়তা দেয়। যারা আরাম এবং গোপনীয়তা পছন্দ করেন, তাদের জন্য এটি একটি ভালো বিকল্প।
২. শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) কেবিন:
- ভাড়া: ৪০০-৫০০ টাকা
- এসি কেবিন একেবারে ব্যক্তিগত এবং আরামদায়ক। যারা ব্যক্তিগত পরিবেশ পছন্দ করেন এবং স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য একটু বেশি খরচ করতে প্রস্তুত, তাদের জন্য এটি সেরা পছন্দ।
৩. শোভন চেয়ার (নন-এসি):
- ভাড়া: ৮০-১২০ টাকা
- শোভন চেয়ার নন-এসি আসন হলেও বেশ আরামদায়ক এবং সাশ্রয়ী। সাধারণ যাত্রীদের জন্য এটি সবচেয়ে জনপ্রিয়।
৪. লোকাল ট্রেনের ভাড়া:
- ভাড়া: ৫০-৭০ টাকা
- লোকাল ট্রেনে কম খরচে ভ্রমণ করা যায়, তবে এতে যাত্রার সময় কিছুটা বেশি লাগে এবং স্টপেজ সংখ্যা বেশি থাকে।
ময়মনসিংহ থেকে জারিয়া ট্রেনের সময়সূচী
ময়মনসিংহ থেকে জারিয়া রুটে বেশ কয়েকটি ট্রেন চলাচল করে, যার মধ্যে আন্তঃনগর, মেইল এবং লোকাল ট্রেন রয়েছে। এসব ট্রেন বিভিন্ন সময়ে যাত্রীদের জন্য সুবিধামত চলাচল করে।ময়মনসিংহ থেকে জারিয়ার ট্রেনের সময়সূচী নিচে উল্লেখ করা হলো:
১. তিস্তা এক্সপ্রেস (৭০৭/৭০৮):
- ময়মনসিংহ থেকে ছাড়ার সময়: সকাল ৭:৩০
- জারিয়াতে পৌঁছানোর সময়: সকাল ৯:৪৫
- স্টপেজ স্টেশন: ময়মনসিংহ, নান্দাইল, ইশ্বরগঞ্জ, জারিয়া
২. মহুয়া এক্সপ্রেস (৭৮৫/৭৮৬):
- ময়মনসিংহ থেকে ছাড়ার সময়: দুপুর ১২:১৫
- জারিয়াতে পৌঁছানোর সময়: দুপুর ২:৩০
- স্টপেজ স্টেশন: ময়মনসিংহ, গৌরীপুর, শ্যামগঞ্জ, জারিয়া
৩. হাওর এক্সপ্রেস (৭৫৯/৭৬০):
- ময়মনসিংহ থেকে ছাড়ার সময়: সন্ধ্যা ৫:২০
- জারিয়াতে পৌঁছানোর সময়: সন্ধ্যা ৭:৪৫
- স্টপেজ স্টেশন: ময়মনসিংহ, তারাকান্দা, ধোবাউড়া, জারিয়া
৪. লোকাল ট্রেন:
- ছাড়ার সময়: বিভিন্ন সময়ে
- যাত্রার সময়কাল: প্রায় ৩-৩.৫ ঘণ্টা
- লোকাল ট্রেনগুলো নিয়মিতভাবে যাত্রা করে এবং প্রতিটি স্টেশনে থামে। এ ট্রেনগুলোতে সাধারণত বেশি সময় লাগে, তবে ভাড়া কম।
ময়মনসিংহ থেকে জারিয়া রুটের স্টপেজ স্টেশনসমূহ
ময়মনসিংহ থেকে জারিয়া যাত্রাপথে বেশ কয়েকটি স্টপেজ স্টেশন রয়েছে, যেখানে ট্রেনগুলো যাত্রাবিরতি দেয়। এসব স্টেশনে যাত্রী উঠানামা করে এবং কিছু স্টেশন গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবেও পরিচিত। নিচে ময়মনসিংহ থেকে জারিয়া রুটের স্টপেজ স্টেশনগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:
১. ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশন:
ময়মনসিংহ বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগীয় শহর। এখানে যাত্রীদের জন্য নানা সুবিধা রয়েছে এবং প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী এই স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে যাত্রা করেন।
২. নান্দাইল স্টেশন:
ময়মনসিংহ থেকে জারিয়ার পথে নান্দাইল একটি উল্লেখযোগ্য স্টেশন। নান্দাইল একটি জনবহুল এলাকা হওয়ায় এখানে ট্রেনের যাত্রাবিরতি সাধারণত প্রয়োজনীয়।
৩. ইশ্বরগঞ্জ স্টেশন:
ময়মনসিংহ থেকে কিছুটা দূরে অবস্থিত ইশ্বরগঞ্জ একটি ছোট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন। এখানকার যাত্রীরা নিয়মিতভাবে জারিয়া ও অন্যান্য গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাতায়াত করেন।
৪. গৌরীপুর স্টেশন:
গৌরীপুর স্টেশনটিও ময়মনসিংহ থেকে জারিয়ার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টপেজ স্টেশন। এখানে ট্রেন কিছু সময়ের জন্য যাত্রা বিরতি দেয়।
৫. জারিয়া স্টেশন:
জারিয়া হলো এই রুটের শেষ স্টেশন। এটি জারিয়া উপজেলায় অবস্থিত এবং এখান থেকে যাত্রীরা তাদের গন্তব্যে পৌঁছে যান।
ট্রেনে ভ্রমণের সময়কাল
ময়মনসিংহ থেকে জারিয়া রুটে ট্রেনের ভ্রমণ সময়কাল ট্রেনের ধরন এবং স্টপেজের উপর নির্ভর করে। সাধারণত আন্তঃনগর ট্রেনগুলো ২ থেকে ২.৫ ঘণ্টার মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছে যায়। লোকাল বা মেইল ট্রেনগুলোতে কিছুটা বেশি সময় লাগে, সাধারণত ৩ থেকে ৩.৫ ঘণ্টা।
ট্রেনে ভ্রমণের সুবিধা
ট্রেনের ভ্রমণ অন্যান্য যাতায়াত মাধ্যমের তুলনায় বেশ আরামদায়ক এবং সাশ্রয়ী। নিচে ট্রেনে ভ্রমণের কিছু সুবিধা উল্লেখ করা হলো:
১. আরামদায়ক ভ্রমণ:
ট্রেনে যাত্রা বেশ আরামদায়ক। আপনি ট্রেনের ভেতরে হাঁটাহাঁটি করতে পারেন এবং শিথিলভাবে বসে যাত্রা উপভোগ করতে পারেন।
২. সাশ্রয়ী ভাড়া:
ট্রেনের ভাড়া অন্যান্য যাতায়াত মাধ্যমের তুলনায় অনেক কম। সাধারণ যাত্রীরা সাশ্রয়ী মূল্যে যাত্রা করতে পারেন।
৩. নিরাপত্তা এবং নির্ভরযোগ্যতা:
ট্রেনে ভ্রমণ খুবই নিরাপদ। দুর্ঘটনার ঝুঁকি কম এবং রেলপথের সেবা নিয়মিত এবং নির্ভরযোগ্য।
৪. পরিবেশবান্ধব:
রেলপথে ভ্রমণ সড়কপথের তুলনায় অনেক বেশি পরিবেশবান্ধব, কারণ এটি কম জ্বালানি খরচ করে এবং যানজটের কোনো সমস্যা নেই।
টিকিট সংগ্রহের পদ্ধতি
ময়মনসিংহ থেকে জারিয়া রুটের টিকিট আপনি রেলওয়ে স্টেশন থেকে সরাসরি সংগ্রহ করতে পারেন। এছাড়াও বাংলাদেশ রেলওয়ে অনলাইন টিকিট বিক্রির জন্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম চালু করেছে, যেখানে আপনি ঘরে বসেই টিকিট কিনতে পারেন।
অনলাইনে টিকিট বুকিং:
বাংলাদেশ রেলওয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে সহজেই টিকিট সংগ্রহ করা যায়