পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী, ভাড়া এবং স্টপেজ স্টেশন
বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে নতুন যুগের সূচনা করেছে পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেন। এটি পর্যটকদের জন্য একটি বিশেষ ট্রেন যা দেশের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে যাতায়াতের জন্য উপযুক্ত। এই ব্লগ পোস্টে পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী, ভাড়া এবং স্টপেজ স্টেশন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হলো।
পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী
পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটি দৈনিক ঢাকা থেকে সিলেট এবং সিলেট থেকে ঢাকা রুটে চলাচল করে। নিচে ট্রেনের নির্দিষ্ট সময়সূচী দেওয়া হলো:
ঢাকা থেকে সিলেট
- ট্রেন নম্বর: ৭০৩
- প্রস্থান সময়: সকাল ৮:০০ টা
- গন্তব্যে পৌঁছানোর সময়: দুপুর ২:০০ টা
সিলেট থেকে ঢাকা
- ট্রেন নম্বর: ৭০৪
- প্রস্থান সময়: বিকেল ৪:০০ টা
- গন্তব্যে পৌঁছানোর সময়: রাত ১০:০০ টা
ট্রেনের ভাড়া
পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটি যাত্রীদের জন্য বিভিন্ন শ্রেণীর সেবা প্রদান করে। বিভিন্ন শ্রেণীর ভাড়া নিচে দেওয়া হলো:
এসি কেবিন
- ভাড়া: ২,৫০০ টাকা
- সুবিধা: শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, আরামদায়ক আসন, ব্যক্তিগত কেবিন
এসি চেয়ার
- ভাড়া: ১,৮০০ টাকা
- সুবিধা: শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত, আরামদায়ক আসন
শোভন চেয়ার
- ভাড়া: ১,২০০ টাকা
- সুবিধা: সাধারণ চেয়ার, পর্যাপ্ত লেগ স্পেস
শোভন সাধারণ
- ভাড়া: ৭০০ টাকা
- সুবিধা: সাধারণ আসন
স্টপেজ স্টেশন
পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকা থেকে সিলেট যাওয়ার পথে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে থামে। প্রতিটি স্টেশনের সময়সূচী নিচে দেওয়া হলো:
- কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন (ঢাকা)
- প্রস্থানের সময়: সকাল ৮:০০ টা
- ভৈরব বাজার রেলওয়ে স্টেশন
- প্রস্থানের সময়: সকাল ৯:৩০ টা
- গন্তব্যে পৌঁছানোর সময়: বিকেল ৫:৩০ টা
- কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশন
- প্রস্থানের সময়: সকাল ১১:০০ টা
- গন্তব্যে পৌঁছানোর সময়: বিকেল ৭:০০ টা
- শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন
- প্রস্থানের সময়: দুপুর ১২:৩০ টা
- গন্তব্যে পৌঁছানোর সময়: বিকেল ৮:৩০ টা
- সিলেট রেলওয়ে স্টেশন
- প্রস্থানের সময়: দুপুর ২:০০ টা
- গন্তব্যে পৌঁছানোর সময়: রাত ১০:০০ টা
বিশেষ সুবিধা
পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটি যাত্রীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের সুবিধা প্রদান করে থাকে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
- খাবার ও পানীয়: ট্রেনে বিভিন্ন ধরনের খাবার ও পানীয় পাওয়া যায়। যাত্রীরা তাদের আসনেই খাবার অর্ডার করতে পারেন।
- ইন্টারনেট সুবিধা: ট্রেনে ফ্রি ওয়াইফাই সেবা পাওয়া যায়, যা যাত্রীদের জন্য একটি বড় সুবিধা।
- নিরাপত্তা ব্যবস্থা: ট্রেনটিতে সিসি ক্যামেরা এবং নিরাপত্তার জন্য নিরাপত্তা কর্মী নিয়োজিত থাকে।
- শৌচাগার সুবিধা: ট্রেনটিতে পরিষ্কার ও সুপরিসর শৌচাগার রয়েছে।
পর্যটকদের জন্য বিশেষ সেবা
পর্যটকদের জন্য বিশেষ সেবা হিসেবে পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনে গাইড সেবা, ট্যুর প্যাকেজ এবং স্থানীয় দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে তথ্য প্রদান করা হয়। এছাড়া ট্রেনটিতে বিভিন্ন ধরনের বিনোদনমূলক কার্যক্রমও পরিচালিত হয়, যেমন লাইভ মিউজিক, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী ইত্যাদি।
ভ্রমণ প্রস্তুতি
পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনে ভ্রমণের জন্য কিছু প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি। টিকিট বুকিং, আসন সংরক্ষণ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য জানার জন্য ট্রেনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এবং কাস্টমার সার্ভিস থেকে সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
- টিকিট বুকিং: অনলাইনে এবং রেলওয়ে স্টেশনে টিকিট বুকিং করা যায়। অনলাইন টিকিট বুকিংয়ে অতিরিক্ত সুবিধা পাওয়া যায়, যেমন আসন নির্বাচন, মূল্যছাড় ইত্যাদি।
- ভ্রমণের তারিখ ও সময়: ভ্রমণের তারিখ ও সময় সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন। সময়মত স্টেশনে উপস্থিত থাকা উচিত।
- ব্যাগেজ: যাত্রীদের জন্য নির্ধারিত ওজনের ব্যাগেজ অনুমোদিত। অতিরিক্ত ব্যাগেজের জন্য অতিরিক্ত চার্জ প্রযোজ্য হতে পারে।
- সাধারণ নির্দেশনা: যাত্রীদের জন্য সাধারণ নির্দেশনা মানা উচিত, যেমন ট্রেনের অভ্যন্তরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করা, ধূমপান নিষিদ্ধ এলাকা মানা ইত্যাদি।
পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটি বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। এটি শুধু যে যাত্রীদের জন্য আরামদায়ক ও সাশ্রয়ী ভ্রমণ সেবা প্রদান করে তা নয়, বরং দেশের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে পৌঁছানোর একটি সহজ মাধ্যমও। সময়সূচী, ভাড়া এবং স্টপেজ স্টেশন সম্পর্কে বিস্তারিত জানার মাধ্যমে যাত্রীরা তাদের ভ্রমণ পরিকল্পনা আরও সহজ করতে পারেন। পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটি বাংলাদেশের রেলওয়ে সেবার একটি উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন এবং যাত্রীদের জন্য একটি বিশ্বমানের অভিজ্ঞতা প্রদান করে।