Train Schedule

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ট্রেন ভাড়া, সময়সূচী, এবং স্টপেজ স্টেশন

বাংলাদেশের পর্যটন শহর কক্সবাজার, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতের জন্য সুপরিচিত। কক্সবাজারে ভ্রমণ করতে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক ছুটে আসেন, বিশেষত চট্টগ্রাম থেকে। বাংলাদেশ রেলওয়ে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত সরাসরি ট্রেন সার্ভিস চালু করেছে, যা যাত্রীদের জন্য ভ্রমণকে আরও আরামদায়ক এবং সাশ্রয়ী করেছে।

এই নতুন রুটের মাধ্যমে পর্যটকরা সহজে এবং দ্রুত সমুদ্রসৈকতে পৌঁছাতে পারবেন। যারা বিমান বা বাসে ভ্রমণ এড়াতে চান, তাদের জন্য ট্রেন একটি চমৎকার বিকল্প। ট্রেনের সাশ্রয়ী ভাড়া, নিয়মিত সময়সূচী, এবং বিভিন্ন স্টপেজ স্টেশনের মাধ্যমে এ রুটটি খুব জনপ্রিয় হয়েছে।

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ট্রেনের নাম ও সময়সূচী

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার সরাসরি বেশ কয়েকটি ট্রেন চলাচল করে। প্রধান ট্রেনগুলো হলো:

১. বিচ এক্সপ্রেস (Beach Express)

  • চট্টগ্রাম থেকে ছাড়ার সময়: সকাল ৮:০০ টা
  • কক্সবাজার পৌঁছানোর সময়: দুপুর ১২:০০ টা
  • সাপ্তাহিক বন্ধ: শুক্রবার

২. সাগরিকা এক্সপ্রেস (Sagarika Express)

  • চট্টগ্রাম থেকে ছাড়ার সময়: দুপুর ১:৩০ মিনিট
  • কক্সবাজার পৌঁছানোর সময়: বিকাল ৫:৩০ মিনিট
  • সাপ্তাহিক বন্ধ: সোমবার

৩. বঙ্গোপসাগর এক্সপ্রেস (Bay of Bengal Express)

  • চট্টগ্রাম থেকে ছাড়ার সময়: সন্ধ্যা ৭:০০ টা
  • কক্সবাজার পৌঁছানোর সময়: রাত ১১:০০ টা
  • সাপ্তাহিক বন্ধ: বুধবার

এই ট্রেনগুলো সপ্তাহের বিভিন্ন দিনে চলাচল করে এবং পর্যটকদের প্রয়োজন অনুযায়ী সময়সূচী নির্ধারিত হয়। কক্সবাজারের ট্রেন স্টেশনটি সৈকত থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, তবে এখান থেকে সহজে গাড়ি বা অটো নিয়ে মূল শহরে যাতায়াত করা যায়।

ট্রেনের ভাড়া

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ট্রেন ভাড়া যাত্রীদের জন্য সাশ্রয়ী এবং বিভিন্ন ক্লাসে বিভক্ত। এর ফলে সকল শ্রেণির যাত্রীদের জন্য ভ্রমণটি সহজ হয়েছে। নিচে ট্রেনের বিভিন্ন কোচের ভাড়া তালিকা দেওয়া হলো:

১. শুভ্রন ফার্স্ট ক্লাস (First Class AC)

যারা আরামদায়ক এবং প্রিমিয়াম ভ্রমণ পছন্দ করেন, তাদের জন্য ফার্স্ট ক্লাস এসি কোচ একটি চমৎকার বিকল্প। এই কোচে বড় আরামদায়ক আসন, এসি সুবিধা, এবং নিরাপত্তা ভালোভাবে বজায় রাখা হয়।

  • ভাড়া: ৮৫০ টাকা

২. স্নিগ্ধা কোচ (AC Snigdha)

এই কোচটি এসি সুবিধাসহ আধুনিক এবং তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী। যারা ফার্স্ট ক্লাসের বিকল্প হিসেবে আরামদায়ক ভ্রমণ পছন্দ করেন, তাদের জন্য এটি একটি আদর্শ বিকল্প।

  • ভাড়া: ৭৫০ টাকা

৩. শোভন চেয়ার কোচ (Shovon Chair)

শোভন চেয়ার হলো সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সাশ্রয়ী ক্লাস। এই কোচে যাত্রীরা আরামদায়ক চেয়ারে বসে ভ্রমণ করতে পারেন।

  • ভাড়া: ৪৫০ টাকা

৪. শোভন সাধারণ (Shovon General)

শোভন সাধারণ কোচ হলো সবচেয়ে কম ভাড়ার ট্রেন পরিষেবা। এটি সাধারণ যাত্রীদের জন্য এবং বেশ ভিড় হতে পারে, তবে ভাড়া অত্যন্ত সাশ্রয়ী।

  • ভাড়া: ৩০০ টাকা

ট্রেনের স্টপেজ স্টেশন

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যাওয়ার পথে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন রয়েছে যেখানে ট্রেন থামে। এই স্টেশনগুলোতে যাত্রীরা ওঠা-নামা করতে পারেন, যা যাত্রীদের ভ্রমণকে আরও সুবিধাজনক করে তোলে। প্রধান স্টপেজগুলো হলো:

১. দোহাজারী স্টেশন

দোহাজারী হলো চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন। এখান থেকে পর্যটকরা বান্দরবান, লামা, এবং অন্যান্য পাহাড়ি এলাকায় ভ্রমণ করতে পারেন।

২. চকরিয়া স্টেশন

চকরিয়া কক্সবাজার জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা। এই স্টেশন থেকে কক্সবাজারের বিভিন্ন পর্যটন এলাকা যেমন মহেশখালী দ্বীপ এবং বাঁকখালী নদীর সাথে সংযোগ রয়েছে।

৩. রামু স্টেশন

রামু হলো কক্সবাজারের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন, যা বৌদ্ধ ধর্মীয় স্থানের জন্য প্রসিদ্ধ। এখানে অনেক পর্যটক রামুর বৌদ্ধ বিহার দেখতে আসেন।

ভ্রমণের সুবিধা

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ট্রেনে ভ্রমণের অনেক সুবিধা রয়েছে। ট্রেনের সুবিধাসমূহ নিম্নরূপ:

  • আরামদায়ক যাত্রা: ট্রেনে ভ্রমণ সাধারণত আরামদায়ক এবং সময় সাশ্রয়ী। বিমানবন্দর বা বাসের জ্যাম এড়িয়ে, ট্রেনের মাধ্যমে পর্যটকরা সহজে এবং দ্রুত কক্সবাজারে পৌঁছাতে পারেন।
  • ট্রেনের সময়সূচী: যাত্রীদের সুবিধার্থে নিয়মিত ট্রেনের সময়সূচী দেওয়া হয়েছে, যা সকাল, দুপুর, এবং সন্ধ্যায় পাওয়া যায়।
  • সাশ্রয়ী ভাড়া: অন্যান্য পরিবহন মাধ্যমের তুলনায় ট্রেনের ভাড়া বেশ সাশ্রয়ী, যা পর্যটকদের জন্য একটি সুবিধাজনক বিকল্প।
  • স্টেশন সুবিধা: প্রতিটি স্টেশনে খাবার, পানীয়, এবং বিশ্রামের জন্য প্রয়োজনীয় সুবিধা থাকে। স্টেশনগুলোতে যাত্রীরা ট্রেনের অপেক্ষায় আরাম করতে পারেন।

টিকেট বুকিং

টিকেট বুকিং প্রক্রিয়া খুবই সহজ এবং যাত্রীরা অনলাইনে বা স্টেশনের কাউন্টার থেকে টিকেট সংগ্রহ করতে পারেন। অনলাইনে টিকেট কাটার জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে সুবিধা পাওয়া যায়। টিকেট কাটার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র এবং মোবাইল নম্বর প্রয়োজন হবে। নির্দিষ্ট তারিখের জন্য আগাম টিকেট বুকিং করার সুযোগও রয়েছে, যা পর্যটন মৌসুমে বিশেষভাবে সহায়ক।

পর্যটকদের জন্য কিছু টিপস

১. আগাম টিকেট বুকিং: কক্সবাজার ভ্রমণ সাধারণত অনেক জনপ্রিয়, বিশেষ করে পর্যটন মৌসুমে। তাই ট্রেনের টিকেট আগাম বুকিং করা ভালো। ২. যাত্রার আগে প্রস্তুতি: চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যাওয়ার ট্রেনগুলো সময়মতো ছাড়ে, তাই স্টেশনে আগেভাগে পৌঁছানোর চেষ্টা করা উচিত। ৩. স্টেশন নিরাপত্তা: স্টেশনে যাত্রীরা নিজেদের নিরাপত্তার দিকে খেয়াল রাখবেন, বিশেষ করে ভিড়ের সময়।

চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার ট্রেন যাত্রা একটি আরামদায়ক, সাশ্রয়ী, এবং নিরাপদ ভ্রমণের মাধ্যম। ২০২৪ সালে এই রুটে বেশ কয়েকটি ট্রেন চালু করা হয়েছে, যা পর্যটকদের জন্য কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকত ভ্রমণকে সহজতর করেছে। বিভিন্ন কোচের ভাড়া এবং স্টপেজ স্টেশনগুলো যাত্রীদের ভ্রমণকে আরও সুবিধাজনক করে তুলেছে।

Bangladesh Railway

ধন্যবাদ আমার সম্পর্কে জানতে চাওয়ার জন্য। আমি কোন ব্যক্তি নই। আমি একটি প্রতিষ্টান যেখানে একাধিক ব্যক্তি কর্মরত। সুতরাং আমাদের সাথে জড়িত যে কেউ আমার এই প্রফাইল ব্যবহার করে তথ্য প্রকাশ করতে পারে। কোন অভিযোগ বা পরামর্শের জন্য আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন। ধন্যবাদ

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button