বেনাপোল থেকে খুলনা ট্রেনের সময়সূচী ও ভাড়া
বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলীয় রেলপথগুলোর মধ্যে বেনাপোল থেকে খুলনা একটি গুরুত্বপূর্ণ রুট। এই রুটের ট্রেনগুলি শুধুমাত্র যাত্রী পরিবহনেই নয়, বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বেনাপোল বন্দরের মাধ্যমে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে নিয়মিত যাত্রী ও পণ্য পরিবহন চলে। এজন্য বেনাপোল থেকে খুলনা ট্রেন যোগাযোগ প্রতিদিন অসংখ্য যাত্রীর যাত্রার মাধ্যম। ট্রেন যাত্রা আরামদায়ক এবং খরচের দিক থেকেও সাশ্রয়ী। আজকের এই পোস্টে বেনাপোল থেকে খুলনা ট্রেনের সময়সূচী, ভাড়া এবং বিভিন্ন স্টপেজ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হলো।
বেনাপোল থেকে খুলনা ট্রেনের সময়সূচী
বেনাপোল থেকে খুলনা সরাসরি কয়েকটি ট্রেন চলাচল করে, যার মধ্যে অন্যতম হলো বেনাপোল এক্সপ্রেস। এই ট্রেনটি নিয়মিতভাবে এই রুটে চলাচল করে। নিচে সময়সূচী উল্লেখ করা হলো:
- বেনাপোল এক্সপ্রেস (Train No. 796/795):
- বেনাপোল থেকে ছাড়ার সময়: সকাল ১০:৩০
- খুলনায় পৌঁছানোর সময়: দুপুর ১:১০
- বিরতিহীন ট্রেন: না, বিভিন্ন স্টেশনে থামে
এই ট্রেনটি সপ্তাহের প্রতিদিন চলাচল করে, তবে শনি এবং মঙ্গলবার বন্ধ থাকে।
অন্যান্য স্টপেজ স্টেশন:
বেনাপোল থেকে খুলনা যাওয়ার পথে ট্রেনটি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে থামে। এই স্টেশনগুলো হল:
- নাভারণ
- জেসোর (যশোর)
- বাঘারপাড়া
- কোড়া
- দীঘলিয়া
- ফুলতলা
- দৌলতপুর
এই স্টেশনগুলোতে ট্রেনটি কিছু সময়ের জন্য থামে, যাত্রী উঠানামা করে। যাত্রীরা এই স্টেশনগুলো থেকে ট্রেনে উঠতে বা নামতে পারেন।
বেনাপোল থেকে খুলনা ট্রেনের ভাড়া
ট্রেনের ভাড়া শ্রেণি অনুসারে পরিবর্তিত হয়। বেনাপোল থেকে খুলনা পর্যন্ত ভাড়ার শ্রেণীভেদে তালিকা নিচে দেওয়া হলো:
- শুভ্রনিসী চেয়ার কোচ (Shovon Chair):
ভাড়া: ১৪৫ টাকা
সুবিধা: আরামদায়ক আসন এবং পর্যাপ্ত লেগস্পেস। - শুভ্রনিসী (Shovon):
ভাড়া: ৯০ টাকা
সুবিধা: সাধারণ কোচ, যেখানে অধিকাংশ যাত্রী বসে যাত্রা করেন। - স্নিগ্ধা (Snigdha):
ভাড়া: ২৮৮ টাকা
সুবিধা: এয়ার কন্ডিশন্ড চেয়ার কোচ, যা অধিক আরামদায়ক। - প্রথম শ্রেণি (First Class):
ভাড়া: ২৮৫ টাকা
সুবিধা: প্রথম শ্রেণির কোচ আরামদায়ক এবং নিরিবিলি। - প্রথম শ্রেণি এসি (First Class AC):
ভাড়া: ৫৪৫ টাকা
সুবিধা: এসি সুবিধা সহ উচ্চমানের আসন এবং পরিষেবা।
কেন বেনাপোল-খুলনা ট্রেন জনপ্রিয়?
বেনাপোল থেকে খুলনা পর্যন্ত ট্রেন যাত্রা বিভিন্ন কারণে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। প্রথমত, এই ট্রেনগুলো যাত্রীদের একটি আরামদায়ক ও সাশ্রয়ী ভ্রমণ অভিজ্ঞতা প্রদান করে। দ্বিতীয়ত, খুলনা একটি বড় শহর এবং অর্থনৈতিক হাব হওয়ায় প্রতিদিন প্রচুর যাত্রী এই রুটে চলাচল করেন। তৃতীয়ত, যশোর অঞ্চলে অনেক ব্যবসায়িক ও শিল্প এলাকা থাকায় এই রুটের যাত্রীসংখ্যা বেশি।
ট্রেনের সুবিধা ও আরাম
ট্রেনের আরামদায়ক আসন, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশ, এবং নিরাপদ ভ্রমণের জন্য অনেকেই ট্রেনকে বেছে নেন। বিশেষ করে বেনাপোল থেকে খুলনা ট্রেনের যাত্রীরা সাশ্রয়ী ভাড়ায় দীর্ঘ যাত্রার ক্লান্তি দূর করতে পারেন। স্নিগ্ধা এবং প্রথম শ্রেণির কোচগুলিতে এসি সুবিধা পাওয়া যায়, যা গ্রীষ্মকালে বিশেষ আরামদায়ক।
টিকিট কেনার পদ্ধতি
বেনাপোল থেকে খুলনা ট্রেনের টিকিট বিভিন্নভাবে কেনা যায়। যাত্রীরা সরাসরি বেনাপোল বা খুলনা রেলওয়ে স্টেশন থেকে টিকিট সংগ্রহ করতে পারেন। এছাড়া, বাংলাদেশ রেলওয়ের অনলাইন পোর্টাল বা মোবাইল অ্যাপ থেকেও টিকিট ক্রয় করা সম্ভব। ট্রেনের ভিড় বেশি হলে আগেভাগে টিকিট কেটে রাখা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
বেনাপোল থেকে খুলনা ট্রেনের যাত্রা একটি আরামদায়ক, সাশ্রয়ী এবং নির্ভরযোগ্য ভ্রমণ মাধ্যম। সময়সূচী অনুযায়ী ট্রেনে ভ্রমণ করলে আপনি সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন। বিভিন্ন স্টেশনে থামার সুযোগ থাকায় যাত্রীরা সুবিধাজনক সময়ে ট্রেনে উঠতে পারেন।