ঢাকা বিমানবন্দর থেকে খুলনা ট্রেনের সময়সূচী, ভাড়া এবং স্টপেজ স্টেশন

বাংলাদেশের ট্রেন যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত উন্নত এবং দীর্ঘ যাত্রার জন্য ট্রেন একটি অন্যতম জনপ্রিয় পরিবহন মাধ্যম। যারা ঢাকা থেকে খুলনা ভ্রমণ করতে চান, তাদের জন্য বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে খুলনা পর্যন্ত ট্রেন যোগাযোগ অত্যন্ত সুবিধাজনক। এই পোস্টে আমরা ঢাকা বিমানবন্দর থেকে খুলনা পর্যন্ত চলাচলকারী ট্রেনের সময়সূচী, ভাড়া এবং স্টপেজ স্টেশন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
ঢাকা বিমানবন্দর থেকে খুলনা ট্রেনের তালিকা
ঢাকা বিমানবন্দর থেকে খুলনা পর্যন্ত কিছু নির্দিষ্ট ট্রেন চলাচল করে, যেগুলি অধিকাংশ সময়ই দীর্ঘ দূরত্বের যাত্রীদের জন্য সেবা প্রদান করে থাকে। এখানে প্রধান ট্রেনগুলির তালিকা এবং তাদের সময়সূচী দেওয়া হল:
- সুন্দরবন এক্সপ্রেস (726)
- ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ছাড়ার সময়: সকাল ৮:৩০
- খুলনায় পৌঁছানোর সময়: রাত ৯:১৫
- সপ্তাহে বন্ধের দিন: বুধবার
- চিত্রা এক্সপ্রেস (764)
- ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ছাড়ার সময়: রাত ৭:৫০
- খুলনায় পৌঁছানোর সময়: ভোর ৫:১০
- সপ্তাহে বন্ধের দিন: সোমবার
- বনলতা এক্সপ্রেস (791)
- ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ছাড়ার সময়: বিকাল ৩:১০
- খুলনায় পৌঁছানোর সময়: রাত ১১:৪০
- সপ্তাহে বন্ধের দিন: রবিবার
- মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস (793)
- ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ছাড়ার সময়: বিকাল ৫:৩০
- খুলনায় পৌঁছানোর সময়: রাত ১২:৩০
- সপ্তাহে বন্ধের দিন: মঙ্গলবার
ভাড়া ও টিকিটের ধরন
ঢাকা বিমানবন্দর থেকে খুলনা পর্যন্ত ট্রেনে বিভিন্ন ধরনের শ্রেণির টিকিট পাওয়া যায়। যাত্রীদের সুবিধা অনুযায়ী সাধারণত তিনটি শ্রেণির টিকিট পাওয়া যায়: শোভন, শোভন চেয়ার এবং এসি স্নিগ্ধা। নিচে প্রতিটি শ্রেণির সম্ভাব্য ভাড়ার তালিকা দেওয়া হল (প্রতি ভাড়ার মধ্যে পরিবর্তন হতে পারে):
- শোভন (সাধারণ শ্রেণি):
ভাড়া: ৩৬৫ টাকা (প্রতি যাত্রী) - শোভন চেয়ার:
ভাড়া: ৪৮৫ টাকা (প্রতি যাত্রী) - এসি স্নিগ্ধা:
ভাড়া: ৮৯৫ টাকা (প্রতি যাত্রী)
বিঃদ্রঃ: ভাড়া ট্রেনের ধরন এবং আসনের ওপর নির্ভর করে পরিবর্তন হতে পারে। টিকিট কেনার জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করা যেতে পারে।
স্টপেজ স্টেশনসমূহ
ঢাকা বিমানবন্দর থেকে খুলনা পর্যন্ত দীর্ঘ এই ট্রেন যাত্রায় বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনে ট্রেন থামে। এটি যাত্রীদের জন্য একটি সুবিধাজনক ব্যবস্থা, কারণ তারা প্রয়োজনে মাঝপথে নির্দিষ্ট স্টেশনে নামতে বা উঠতে পারেন। নিচে প্রধান স্টপেজ স্টেশনগুলির তালিকা দেওয়া হল:
- ঢাকা বিমানবন্দর
- ট্রেনের প্রাথমিক যাত্রা শুরু এই স্টেশন থেকে।
- রাজবাড়ী
- এটি একটি প্রধান স্টপেজ। এখানে কিছুক্ষণ যাত্রা বিরতি থাকে এবং ট্রেন যাত্রী তুলতে ও নামাতে থামে।
- ফরিদপুর
- খুলনা যাওয়ার পথে ট্রেন ফরিদপুরে যাত্রা বিরতি দেয়। এটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলোর একটি।
- যশোর
- খুলনার আগে শেষ প্রধান স্টেশন যশোর। এটি খুলনার নিকটবর্তী একটি বড় শহর এবং যাত্রীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্টপেজ।
- খুলনা
- খুলনা স্টেশন ট্রেনের শেষ গন্তব্য। খুলনা শহর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর এবং এটি সুন্দরবনের প্রধান প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত।
কেন ট্রেনে খুলনা যাত্রা করবেন?
ঢাকা থেকে খুলনা ভ্রমণের জন্য ট্রেন একটি আরামদায়ক এবং সহজলভ্য পরিবহন মাধ্যম। বাস বা ব্যক্তিগত গাড়ির তুলনায় ট্রেনের যাত্রা অনেক বেশি সুবিধাজনক, কারণ এটি সড়কপথের যাত্রার ঝামেলা থেকে মুক্ত। ট্রেনে ভ্রমণ করতে গেলে সঠিক সময়ে প্ল্যাটফর্মে পৌঁছানো, আসন বরাদ্দ এবং স্টেশনগুলির বিষয়ে সচেতন থাকা গুরুত্বপূর্ণ। নিচে ট্রেনে খুলনা ভ্রমণের কিছু বিশেষ সুবিধা দেওয়া হলো:
- আরামদায়ক ভ্রমণ:
ট্রেনের আসনগুলো বেশ আরামদায়ক। দীর্ঘ যাত্রার জন্য ট্রেনের আসনগুলো অনেক ভালোভাবে সাজানো থাকে, এবং এতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আসনের সুবিধাও পাওয়া যায়। - ভ্রমণের সময়ের নির্ধারিততা:
ট্রেনের সময়সূচী নির্ধারিত থাকে এবং এই কারণে যাত্রীরা যেকোনো যানজট বা রাস্তার সমস্যা থেকে মুক্ত থাকে। - দৃশ্যমান প্রকৃতি:
ট্রেনের জানালা দিয়ে যাত্রীরা পথের আশেপাশের গ্রাম, মাঠ, নদী ইত্যাদির মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন।
ঢাকা বিমানবন্দর থেকে খুলনা পর্যন্ত ট্রেন যাত্রা দেশের অন্যতম আরামদায়ক এবং নির্ভরযোগ্য পরিবহন মাধ্যম। উপরের তালিকাভুক্ত ট্রেনগুলো ছাড়াও আরও কিছু ট্রেন রয়েছে যা ঢাকা থেকে খুলনায় ভ্রমণের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। সময়সূচী ও স্টপেজ স্টেশন সম্পর্কে ধারণা থাকলে যাত্রীরা আরও সহজে এবং পরিকল্পিতভাবে তাদের যাত্রা সম্পন্ন করতে পারবেন। খুলনা ভ্রমণ হতে পারে আপনার জন্য একটি স্মরণীয় অভিজ্ঞতা। ট্রেনের আরামদায়ক আসন এবং স্থির গন্তব্য আপনার ভ্রমণকে করবে আরো সহজ ও সুখকর।